উচ্চতা বাড়ানোর উপায় সমূহ

খনিজ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার

দেহ সঠিকভাবে পুষ্টি পেলে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত উচ্চতা দ্রুত বাড়বে। বিভিন্ন রকমের খনিজ পর্যাপ্ত পরিমাণে আমাদের খাবার তালিকায় রাখতে হবে। হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে এগুলো একান্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। বিশেষভাবে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম যেন পরিমাণ মত গ্রহণ করা হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। হাড়, মাংস পেশির বৃদ্ধি ও মজবুত হওয়ার জন্য প্রয়োজন আমিষ ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ছোট মাছ, মাংস, ডিম, খেজুর, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রোকলি, পালং শাক, পুঁই শাক, বিভিন্ন রকমের ডাল, মটরশুটি, সীমের বীচি, কাঠালের বীচি,আপেল, জাম্বুরা, ডুমুর, লেবু বেশি করে খান।


নিতে হবে বিশ্রাম

পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমের অভ্যাস তৈরী করুন। এটি সবচেয়ে সহজ এবং অনেক কার্যকরী উপায়। সঠিক এবং সুন্দর ঘুম দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির মাত্রা আরো বাড়িয়ে তোলে।


নিয়মিত ব্যায়াম করুন

ব্যায়াম বা খেলাধূলা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। নিয়মিত কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম (ওজন উদ্ধরণ) গ্রোথ হরমোন বাড়ায়। প্রথমে শুরু করতে পারেন বেশ কিছু স্ট্রেচিং দ্বারা। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়িয়ে নিন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের বিভিন্ন জোড়াগুলোতে ভাল প্রভাব পড়ে। ফলে উচ্চতা দ্রুত বাড়ে। সপ্তাহে ৩ দিন নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। তবে শুরুতেই কিছু ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়াম বা হাল্কা দৌড়ে শরীরকে ব্যায়াম করার উপযোগী করে নিতে ভুলবেন না। তবে খেয়াল রাখবেন, অতিরিক্ত ব্যায়াম অনেক সময় উচ্চতার বৃদ্ধি রোধ করে দেয়।

বদভ্যাস ত্যাগ করুন

শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এমন বদভ্যাস দ্রুত ত্যাগ করুন। মাত্রাতিরিক্ত চা বা কফি কোনটাই খাবেন না। ধুমপান যেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি দেহের হরমোন গঠনও কমিয়ে ফেলে। যা আপনার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। বোতলজাত জুস এবং কোমলপানীয়ও আপনার শরীরের একইভাবে ক্ষতি সাধন করে।


খেতে হবে বুঝে শুনে

অনেকেই লম্বা হওয়ার জন্য শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার বেশী পরিমানে গ্রহন করেন। বেশি পরিমাণ শর্করা গ্রহণ মানে রক্তে বেশি পরিমান গ্লুকোজ। এর ফলে ইনসুলিন নামক হরমোনও নিঃসৃত হবে বেশি। ইনসুলিন দেহের গ্রোথ হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। সেই সাথে তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার ,লাল মাংস আপনার শারীরিক বৃদ্ধিতে বাজে প্রভাব ফেলে তাই এসব যতটা সম্ভব ত্যাগ করাই ভাল।


মানসিক চাপ কমান

মানসিক চাপ আপনার বৃদ্ধি হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বাঁধা। যাতে আপনার হরমোনের মাত্রা কমে যায় এবং করটিসল উৎপাদিত হয়। ভিটামিন সি সম্পূরকসমূহ করটিসল কমাতে জোর সহায়তা করে।


প্রশ্বাসে গভীরতা বাড়ানোর

স্বাভাবিক নয়,প্রশ্বাস নিন গভীরভাবে। যেহেতু সব সময় গভীরভাবে প্রশ্বাস নেয়া সম্ভব নয় তাই দিনের যেকোনো একটি সময় নির্বাচন করে গভীরভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যায়াম করুন। চাইলে মেডিটেশন করতে পারেন কারণ মেডিটেশনও একই ফল দেয়।


সঠিক দেহভঙ্গি

যদি আপনার বয়স ২৫ অতিক্রম করে থাকে এবং নিজের উচ্চতা আপনার কাছে যথেষ্ট বলে মনে না হয় তবে মন খারাপ করবেন না। আর সবার মত আপনিও নিজেকে লম্বা হিসেবে তুলে ধরতে পারেন। এ জন্য আপনার দেহভঙ্গির প্রতি নজর দিন। ঘাড় ও পিঠ সোজা করে হাঁটুন। বসার সময়েও সোজা হয়ে বসুন। মাথা সোজা রাখুন। কুঁজো হয়ে ও নিচু হয়ে হাঁটা বা বসার অভ্যাস থাকলে তা পরিহারে নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যান। আপনার দেহভঙ্গি ঋজু হলে আপনাকে লম্বা দেখাবে।


কমিয়ে ফেলুন ওজন

ওজন বেশি থাকলে কিন্তু আপনাকে খাটো দেখাবে। সেক্ষেত্রে সঠিকভাবে নিয়ম মেনে ওজন কমিয়ে নিন। ওজন কমে গেলে আপনাকে অনেকটাই লম্বা দেখাবে


পোশাক নির্বাচন

নিজের উচ্চতাকে বাড়িয়ে দেখাতে পোশাক নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পোশাক আপনাকে দিতে পারে লম্বা হওয়ার অনুভূতি। মেয়েদের ক্ষেত্রে ভারি কাজ করা শাড়ির বদলে স্ট্রাইপ ও ছোট প্রিন্টের মধ্যে জর্জেট, লিলেন, শিফন ইত্যাদি বেছে নিন। সালোয়ার কামিজ ও ফতুয়ার ক্ষেত্রে লম্বা ও বডি হাগিং ধাঁচের হলে ভাল লাগবে। রঙ হিসেবে গাঢ় রঙ বেছে নিতে পারেন। পায়ে থাকতে পারে হিল জাতীয় জুতা বা স্যান্ডেল। পুরুষদের জন্য জুতা হতে পারে হিলযুক্ত। সাথে শার্ট হতে পারে টাইট ফিটিঙের। পরতে পারেন স্ট্রাইপ ও চেক। মোটাদের ক্ষেত্রে কাপড় কিছুটা ঢিলা এবং লম্বা মাপের হল ভাল লাগবে। এতে মোটাভাব অনেকটাই ঢেকে যাবে।দেখাবে বেশ কিছুটা লম্বা ।


সঠিকভাবে ঘুমান

লম্বা হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে হাঁটাচলা করার সময়, বসার সময় সঠিকভাবে ঘাড় ও মেরুদণ্ড সোজা রাখবেন। ঘুমানোর সময়ও ঘাড় সোজা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা লম্বা হবার ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।


পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার

লম্বা হওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দেহের হাড় ও কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।


লম্বা হওয়ার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে সুষম খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, জিঙ্ক যুক্ত খাদ্য খেতে হবে।

আমাদের দেহে ভিটামিন ডি গ্রোথ হরমোন উৎপন্ন করে।

আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন এবং হাড় মজবুত করে। দুধে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে, দুধের পরিবর্তে ডাল ও বাদাম খেয়ে দুধের অভাব অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব।৬০ গ্রাম ডালে প্রায় ২৫০ মিঃ লিঃ দুধের সমান প্রোটিন আছে। এছাড়া দই, সবুজ শাকসবজীতেও ক্যালসিয়াম পাবেন।

ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, এবং কার্বোহাইড্রেট কোষ গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

আমাদের দেহে প্রোটিন পেশীর বৃদ্ধি ও হাড়ের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত পরিমাণ চর্বিহীন প্রোটিন খাবার খাবেন। চর্বিহীন প্রোটিন খাবার বলতে মুরগীর মাংস, ডাল, মাছ, দুধ এই ধরনের খাদ্য।

উচ্চতা বৃদ্ধিতে ভাত এর বদলে রুটি খাওয়া ভাল।

এছাড়াও খাবার হজম ও সম্পূর্ণ দেহে পুষ্টি পৌঁছানোর বিষয়ের উপরও লম্বা হওয়া নির্ভরশীল। সুষম খাদ্য নিয়মিত খাবার চেষ্টা করবেন।


লম্বার হওয়ার জন্য কোন ঔষুধ নয়

লম্বা হওয়ার সহজ উপায় হিসাবে সবচেয়ে কার্যকর ও খুবই ব্যয়বহুল উপায়। লম্বা হওয়ার জন্য মানবদেহে ইঞ্জেকশন দিয়ে হরমোন বৃদ্ধি করা যায়। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি, ফলে একজন ডাক্তার কখনই এরকম কিছু প্রেস্ক্রাইব করবে না। লম্বা হওয়ার জন্য বাজারে অনেক ঔষুধ পাওয়া যায়। এগুলোও আপনাকে লম্বা হওয়ার নিশ্চয়তা দিলেও আসলে এগুলো ব্যবহারে লম্বা হওয়ার পরিবর্তে স্বাস্থ্যহানি করবে।


লম্বা হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে এমন কিছু করবেন না

লম্বা হবার জন্য শরীরের উপর চাপ সৃষ্টি করে এমন ভারি কোন জিনিস বহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভারি জিনিস বহনের কারনে মেরুদণ্ডের উপর চাপ পড়ে ফলে লম্বা হবার পথে বাধা প্রাপ্ত হয়। যেমনঃ পানি ভর্তি বালতি, ভারি স্কুল ব্যাগ। উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য কিছু জিনিস এড়িয়ে চলতে হবে। পচা, বাসি খাদ্য একেবারে খাওয়া যাবেনা। এমনকি সকালে না খেয়ে কাজে যাওয়া ত্যাগ করতে হবে। জাংক ফুড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, অতিরিক্ত চিনি, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, ড্রাগ, এলকোহল, ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি দেহে গ্রোথ হরমোন তৈরিতে বাঁধা প্রদান করে ও করটিসল উত্পাদিত হয়। ফলে লম্বা হবার পথে বাধা প্রাপ্ত হয়।


ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ

নিজের উচ্চতা নিয়ে অনেকেই বেশ হীনমন্যতায় ভুগেন। অনেকের ধারণা লম্বা কম বেশি হওয়ার পেছনে শুধুমাত্র জেনেটিক কিছু ব্যাপার কাজ করে। তবে আপনার পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ও আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপের উপরও উচ্চতা কম বেশি হয়। ২০ বছর বয়সেও যদি উচ্চতা সঠিকভাবে না বাড়ে তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।


কিছু ব্যায়াম

ছোট বেলা থেকে এ ব্যায়াম গুলো নিয়মিত করা ভালো। তবে দেখা যায় আমরা অনেকে ব্যায়াম করি টানা ১সপ্তাহ, অতিরিক্ত করে অল্প সময়ে ফল পেতে চাই। এটা ঠিক না। অল্প অল্প করে প্রতি দিন ব্যায়াম করা উচিত্। আর যেকোন ব্যায়াম করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত্। আর ব্যায়াম করার আগে শরীর গরম করে নেয়া উচিত। নিচে কয়েকটি সহজ ব্যায়ামের উপায় দেয়া হলো।


০১. মেঝেতে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে শরীরের উপরের অংশটি আস্তে আস্তে তুলুন। মেরুদন্ড বাঁকা করে মাথাটা পেছনের দিকে যতটা পারা যায় বাঁকান।

০২. হাঁটু ভাঁজ করে, হাতের তালু ও হাঁটুতে ভর দিয়ে বিড়ালের মত হোন। মাথা উপরের দিকে বাঁকিয়ে পিঠ নিচের দিকে বাঁকিয়ে নিন। এরপর মাথা নিচু করে মেরুদন্ড বা পিঠ উপরের দিকে বাঁকা করুন। ৮ সেকেন্ড পর এভাবে কয়েক বার করুন।

০৩. মেঝেতে বসুন। দু পা দুদিকে ছড়িয়ে দিন। এরপর ডান হাঁটু তে নাক লাগানোর চেষ্টা করুন, হাঁটু ভাঁজ না করে যতটা পারা যায়। ৮ সেকেন্ড থাকুন এভাবে। এরপর বা পায়ে একই ভাবে করুন।

০৪. উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাতের তালু ও পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে শরীরটি উপর দিকে বাঁকিয়ে উঁচু করে তুলে ধরুন মাথা নিচে রেখে। এভাবে ৮ সেকেন্ড থাকুন।

০৫. মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাটু ভাঁজ করে পায়ের গোড়ালী নিতম্বের কাছে নিয়ে আসুন। এরপর গোড়ালী হাত দিয়ে ধরুন। এরপর কোমড় সহ নিতম্ব উপরের দিকে উঠান। মাথা নিচে থাকবে। এভাবে ১০ সেকেন্ড থাকুন।


পানি পান করুন

ক্যাফেইনেটেড এবং কার্বোনেটেড জাতীয় যেকোন পানীয় থেকেই বাচ্চাদের বিরত রাখুন। এর পরিবর্তে দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করুন। এতে শুধু হজম শক্তি বাড়বে না, একইসঙ্গে দ্রুতগতিতে হাড়ের বৃদ্ধিও ঘটবে।


উচ্চতা বাড়াতে ভিটামিন ডি

আমরা সকলেই জানি ভিটামিন ডি হাড়ের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী একটি উপাদান। ভিটামিন ডি পরিমিত পেলে হাড়ের বৃদ্ধি সঠিকভাবে ঘটে এবং এতে উচ্চতা আপনাআপনিই বৃদ্ধি পায়। তাই সকালের উষ্ণ কোমল রোদ দেহে পড়তে দিন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।


প্রাকৃতিকভাবে উচ্চতা বাড়ানো

ছোটোবেলা থেকেই কিছু অভ্যাস এবং কার্যকলাপ আয়ত্ত করে নিতে পারলে উচ্চতাকেও অনেকটা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব। আর কেবল শিশুদেরই যে উচ্চতা বাড়বে এমনটি নয়। আবার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকের পক্ষে লম্বা হওয়া সম্ভব হয় না। কাজেই ছোটবেলা থেকেই এমন কিছু উপায় অবলম্বন করুন যাতে প্রাকৃতিকভাবেই নির্দিষ্ট উচ্চতার অধীকারী হয়ে উঠা সম্ভব হয়। অনেকে আবার উচ্চতা বাড়াতে বিভিন্ন ওষুধ খেয়ে থাকেন। এতে উচ্চতা তো বাড়েই না বরং দেখা দেয় নানা সমস্যা। তাই জেনে নিন প্রাকৃতিকভাবে উচ্চতা বাড়ানো কিছু উপায়। সুষম খাবার খান ছোটবেলা থেইে শিশুদের স্বাস্থ্যকর ডায়েটের উপর জোর দিন। এজন্য তাদের দুধ এবং দুধের তৈরি বিভিন্ন খাবার খাওয়ান। এগুলোতে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড়ের গঠনে অনেক বেশি কার্যকরী। চাইলে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দই, পনিরসহ আরও বিভিন্ন ধরনের খাবার রাখতে পারেন। পানি পান করুন ক্যাফেইনেটেড এবং কার্বোনেটেড জাতীয় যেকোন পানীয় থেকেই বাচ্চাদের বিরত রাখুন। এর পরিবর্তে দিনে কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করুন। এতে শুধু হজম শক্তি বাড়বে না, একইসঙ্গে দ্রুতগতিতে হাড়ের বৃদ্ধিও ঘটবে। উচ্চতা বাড়াতে ভিটামিন ডি আমরা সকলেই জানি ভিটামিন ডি হাড়ের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী একটি উপাদান। ভিটামিন ডি পরিমিত পেলে হাড়ের বৃদ্ধি সঠিকভাবে ঘটে এবং এতে উচ্চতা আপনাআপনিই বৃদ্ধি পায়। তাই সকালের উষ্ণ কোমল রোদ দেহে পড়তে দিন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান। পর্যাপ্ত ঘুমান এটা প্রমাণিত যে, ঘুমানোর ফলে শরীরের টিস্যুগুলো পূর্ণ বিশ্রাম পায় যা বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। আবার শরীরের বৃদ্ধির জন্য এই ঘুমটা অনেক বেশি জরুরি। এক্ষেত্রে উষ্ণ পানিতে গোসল করলে ঘুম অনেক ভালো হয়। কমপক্ষে ৮-১১ ঘণ্টা ঘুমালে উচ্চতা সর্বোচ্চ বাড়ে। খেলাধুলা করুন শারীরিকভাবে ফিট থাকতে বাচ্চাদের নানাভাবে উৎসাহিত করুন। এজন্য ছোটবেলা থেকেই তাদের খেলাধুলা বিশেষ করে ক্রিকেট, ফুটবল, বেস্কেটবল, ভলিবল, টেনিস, সাঁতার প্রভৃতিতে অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে করে উচ্চতা বাড়বে। দেহের সঠিক অঙ্গবিন্যাস হাঁটাচলা করা এবং বসার সময় সঠিকভাবে ঘাড় ও মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটা ও বসা এবং শোয়ার সময় ঘাড় বেশি বাঁকা না করে মেরুদণ্ডের প্রায় সমান্তরালে রাখার মতো অঙ্গবিন্যাসও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। যোগব্যায়াম করুন সঠিকভাবে শ্বাসের ব্যায়াম করলে চাপমুক্ত থাকা সহজ হয়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ধরনের যোগব্যায়াম আছে যা বেড়ে উঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের যোগব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে উচ্চতা সহজে বাড়বে। বদঅভ্যাস এড়িয়ে চলুন ধূমপান, মদ্যপান এবং ড্রাগস নেয়ার মতো বাজে অভ্যাস দেহের সর্বোচ্চ বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে। বলতে গেলে, দেহের বৃদ্ধি এই বাজে অভ্যাসগুলো একেবারেই বন্ধ করে দেয়। তাই নিজেকে এই বদঅভ্যাস থেকে দূরে রাখুন।



কি খাবার খেলে দ্রুত লম্বা হওয়া যায়

এমন কিছু অসাধারণ খাবারের নাম, খাদ্য তালিকায় যারা স্থান পেলে বাড়বে দেহের উচ্চতা।


১. আপেল :
আপেলে থাকা ফাইবার এবং পানি বাচ্চাদের লম্বা হতে সাহায্য করে থাকে। তাই প্রতিদিন খাবারের আধা ঘন্টা আগে একটি করে আপেল খেতে দিন এতে করে ফাইবারটি লম্বা হতে সাহায্য করে থাকবে।

২. আভাকাডো :
দুপুরে খাবার সময়ে অর্ধেকটা আভাকাডো দেহে বিভিন্ন পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। এত করে লম্বা হতে সহায়তা করে থাকে।

৩. স্যুপ :
স্যুপ স্বাস্থ্য উপযোগী একটি খাবার। এতে ক্যালরি রয়েছে যা ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ফলে কোষ বৃদ্ধি করে লম্বা করে তোলে।

৪. মটরশুটি, ছোলা, মসূর :
এই ধরনের খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন বি এবং আয়রন রয়েছে যেগুলো শরীরের কোষ বুদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। ফলে লম্বা হতেও সাহায্য করে থাকে।

৫. ডার্ক চকোলেট :
বাচ্চাদের এমনিতে চকোলেট খেতে দেয়া হয় না। কিন্তু এই ডার্ক চকোলেটও বাচ্চাদের লম্বা করতে সহায়তা করে। এতে থাকা ক্যালরি কোষ বদ্ধি করে ফলে বাচ্চারা লম্বা হয়ে ওঠে।

৬. ডিম :
ডিম একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে প্রোটিন এবং ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এর ফলে শরীরের বৃদ্ধি হয়ে থাকে এবং লম্বা হয়।

৭. বাদাম :
বাদাম বা কাজুবাদামও স্বাস্থ্য উপযোগী একটি খাবার। এটিতে থাকা বিভিন্ন প্রোটিন, ভিটামিন দেহের বিভিন্ন পুষ্টি যোগায়, এবং লম্বা হতেও সহায়তা করে থাকে।

Comments

Popular posts from this blog

প্রবাসিদের কষ্টের গল্প

শীতে মেয়ে ও ছেলের ত্বকের যত্ন